আস্সালামু আলাইকুম! আশা করি আল্লাহ এর অশেষ রহমতে আপনারা সবাই ভালো আছেন।আমিও আপনাদের দোয়াই ভালো আছি। আজকের নতুন টপিকে আপনাকে স্বাগতম! আজকে আপনাদের জানাবো ই-কমার্স ব্যবসা শুরু করার আগে আপনার কি করা উচিৎ।
আমরা অনেকেই ই-কমার্স ব্যবসা শুরু করি তবে আমরা অনেকেই না বুঝে শুনে শুরু করে দেই যার কারনে অধিকাংশ ব্যবসা ঠিক মতো পরিচালিত হয়না। যার কারনে আপনাকে বিজনেস বন্ধ করতে বাধ্য হতে হয়। তাই আজকে আমরা দেখবো ইকমার্স ব্যবসা শুরু করার আগে আপনার করনীয়।
ই-কমার্স: ইকমার্স ব্যবসা কি
ই-কমার্স (e-commerce) মূলত যেকোনো Physical & Digital প্রোডাক্ট ইন্টারনেটের মাধ্যমে বিক্রি করার মাধ্যমকে বোঝায়।
ইন্টারনেটের মাধ্যমে ব্যবসা পরিচালনা করার ডিজিটাল নিয়ম কেই ইকমার্স ব্যবসা বলে।
ইকমার্সে প্রস্তুতি
যেকোনো কাজ শুরু করার আগে প্রস্তুতিটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। আপনি কিভাবে শুরু করবেন কিভাবে পরিচালনা করবেন তা আগে থেকেই বুঝে নিতে হবে।
তাই নিচের যে সকল বিষয়ে আলোচনা করা হয়েছে তা বিস্তারিত জানুন ও জেনে বুজে ব্যবসা শুরু করুন। ইনশাআল্লাহ সফল হতে পারবেন।
প্রতিষ্ঠানের নাম নির্ধারণ
প্রতিষ্ঠান শুরু করার আগে নাম নির্ধারণ আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, নাম নির্ধারন এর সময় আপনার সার্ভিস এর সাথে রিলেটেড এমন নাম নির্বাচন করুন।
যদিও নাম এর থেকেও সার্ভিস ভালো হওয়া প্রয়োজন তারপরও নাম এমন হওয়া উচিৎ যা মনে রাখতে সহজ,
আবার নামটা রাখার আগে আবার ডোমেইন চেক করে নেওয়াটা খুব প্রয়োজন।
ডোমেন নেম যত ছোট হবে তত ভালো, তাই অনেক ভেবে চিন্তে ডোমেইন নেম সিলেক্ট করুন।
ডোমেইন নেম ও হোস্টিং নির্বাচন
আপনার ইকমার্স ব্যবসার সব কিছু শেষ করে দিতে পারে যদি আপনি সঠিক হোস্টিং না কিনেন। তাই আপনার ইকমার্সের জন্য যেমন হোস্টিং দরকার তেমন হোস্টিং ই কিনুন।
ইকমার্সে কেমন হোস্টিং দরকার
ব্যবসার ধরণ অনুযায়ী আপনার হোস্টিং এর চাহিদা ভিন্ন হতে পারে। তবুও যদি মুটামুটি ছোট ইকমার্স নিয়ে কাজ করতে চান তবে শেয়ার্ড হোস্ট নিতে পারেন। তাছাড়াও অনেক হোস্টিং কম্পানি তারা ইকমার্সের জন্য আলাদা হোস্টিং সেল করে তাও নিতে পারেন।
বেশি ভিজিটর আশা শুরু হলে আপনার হোস্টিং প্লান চেন্জ করার দরকার হতে পারে, সেক্ষেত্রে ভিপিএস হোস্টিং নেওয়া যেতে পারে।
একটা কথা মনে রাখবেন আপনার হোস্টিং দুর্বল হলে আপনার সাইট স্লো হতে পারে সেক্ষেত্রে আপনার ভিজিটর কখনো কাস্টমার হবেনা।
ডোমেইন নেম নির্বাচন
ডোমেইন নেম নির্বাচনের ক্ষেত্রে যে যে বিষয় আপনাকে অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে।
- ছোট সহজ ও ব্রান্ডেবল নাম সিলেক্ট করুন
- নাম যাতে অর্থবহ হয় সেদিকে খেয়াল রাখবেন। জটিল যেন না হয়।
- বলতে সুবিধা হয় এদিকেও খেয়াল রাখবেন।
- সর্বউচ্চ 12 বা 5 অক্ষর এর মধ্যে নাম রাখতে পারলে ভালো
- যদিও ডোমেইন নেম এ হাইপেন ব্যবহার করা যায় তবুও হাইপেন ব্যবহার করা ঠিক না।
বাজেট নির্ধারন
আপনার ব্যবসার জন্য কত টাকা বাজেটে রাখবেন তা আগে থেকেই বুঝে নিবেন, তাহলে আপনার পদক্ষেপ নিতে সহজ হবে। বাজেট নির্ধারন শেষ ভেবে নিন কোন কাজে কত খরচ করবেন কত হাতে রাখবেন।
আপনার বাজেট যেমন তেমন প্রোডাক্ট নিয়ে কাজ করুন এবং লাভ ও সময়ের ব্যাপারে যথেষ্ঠ ভেবে নিন।
কাস্টমার এর ইচ্ছা
আপনি যে প্রোডাক্ট নিয়ে কাজ করবেন তা যদি কাস্টমারের পছন্দ না হয় তবে আপনার সেল অনেক কমে যাবে।
তাই আপনাকে আগে জানতে হবে ইন্টারনেটে কোন প্রোডাক্ট ভালো সেল করা সম্ভব।
যদি আপনি এমন প্রোডাক্ট নিয়ে কাজ করতে চান ইন্টারনেটে তেমন কেউ বিজনেস করেনা তাহলে ভালো ভাবে রিসার্চ করে তারপর শুরু করবেন।
কারন ইন্টারনেটে সকল ধরণের প্রোডাক্ট বেশি সেল হয়না।
প্রোডাক্টের গুনগতমান রক্ষা
ইকমার্স ব্যবসা করতে গিয়ে যদি ভালো প্রোডাক্টে নিশ্চয়তা দিতে না পারেন তবে আপনি বেশিদিন টিকতে পারবেন না এখানে।
খারাপ প্রোডাক্ট নিয়ে এলাকার বাজার বা বিভিন্ন দোকানে সেল করা সম্ভব হলেও ইন্টারনেটে লংটাইম বিজনেস করতে অবশ্যই ভালো প্রোডাক্ট নিয়ে কাজ করতে হবে।
অনলাইনে ব্যবসার রিভিউটা খুব দরকারি তাই ভালো প্রোডাক্টের মাধ্যমে রিভিউ অর্জন করুন।
আপনি যে প্রোডাক্ট নিয়ে কাজ শুরু করবেন তা অন্যরা কিভাবে সেল করতেছে তার বিষয়ে খোজখবর নিন তারপর তাদের থেকে ভালো সার্ভিস দেওয়ার চেস্টা করুন।
ই-কমার্স মার্কেটে যে প্রোডাক্টের চাহিদা
ইকমার্স ব্যবসার বর্তমান চাহিদার প্রোডাক্টের ধারনা দেওয়ার চেস্টার করবো তবুও আপনার রিসার্চ এর উপর ব্যবসা করবেন।
- বিভিন্ন দরকারি ইলেক্ট্রনিক্স গেজেট
- এলাকাভিত্তিক খাবার
- টিসার্ট সেলিং বিজসেস
- বাচ্ছাদের জামা কাপড়
- সমসমায়িক প্রোডাক্ট যেমন, মাস্ক
- মোবাইলের দরকারি জিনিস
- গিফট এর সপ
- শাড়ি সেলিং বিজনেস
ডেলিভারি কিভাবে করবেন
ডেলিভারি বিষয়টার কারনে অনেক ক্রেতা হারাতে পারেন কারন আপনি যত ভালো প্রোডাক্ট বা যত কম দামেই প্রোডাক্ট দেন না কেন আপনার ডেলিভারি চার্জ কম না হলে গ্রাহক অনেক চলে যাবে।
তাই যতটা সম্ভব ডেলিভারি চার্জ কম রাখার চেস্টা করুন। অনেক ভাবেই ডেলিভারি চার্জ কমানো সম্ভব, আপনার পোডাক্ট স্টোর আছে সেখানের আশে পাশে অনলাইন মার্কেটিং করুন যাতে অন্য দূর এলাকা থেকে অর্ডার না আসে।
যতটা সম্ভব দ্রুত প্রোডাক্ট পৌছে দিন। তাহলে আবার কেনা আগ্রহ জন্মাবে।
মার্কেটিং
ইকমার্স ব্যবসার জন্য মার্কেটিং খুব গুরুত্বপূ্র্ণ , কারন আপনি যদি সঠিক মার্কেটিং না করতে পারেন তবে আপনি মাসের পর মাস একটা কাস্টমার ও পাবেন না তাই মার্কেটিং খুব গুরুত্বপূর্ণ।
মার্কেটিং এর জন্য আপনি বেছে নিতে পারেন বিভিন্ন স্যোশাল প্লাটফরম ছাড়া বিভিন্ন এডনেটওয়ার্ক।
আপনি চাইলে শুধু ফেসবুক এডস এর মাধ্যমেও ভালো মার্কেটিং করতে পারবেন।
ফেসবুক মার্কেটিং এর মাধ্যমে সেলস জেনারেট করাটাও অন্যান্য মার্কেটিং এর সহজ। তাই ফেসবুক দিয়েই শুরু করতে পারবেন।
পেমেন্ট গ্রহন ও গেটওয়ে
গ্রাহক যাতে সহজে পেমেন্ট করতে পারে সেই ব্যবস্থা করতে হবে। আপনি চাইলে বিকাশ নগদ ও রকেট একাউন্ট খুলেই ব্যবসা শুরু করতে পারেন
যদি পারেন মার্চেন্ট করে দিলে ভালো হয় তবে আপনার ব্যবসার ক্ষেত্রে অনেক সুবিধা পাবেন।
সব থেকে ভালো হয় যদি আপনি একটা অনলাইন পেমেন্ট গেটওয়ে সেট করে নিতে পারেন।বাংলাদেশে বিভিন্ন অনলাইন পেমেন্ট গেটওয়ে আছে যার মাধ্যমে প্রায় সকল ব্যাংক, কার্ড ও মোবাইল ব্যাঙ্কিং এর মাধ্যমে পেমেন্ট রিসিভ করতে পারবেন। জনপ্রিয় পেমেন্ট গেটওয়ে যেমন, এসএসল কমার্জ।
ধৈর্য ধরার মানসিকতা
নীতির সাথে আপোষ করে সঠিক নিয়মে সততার সাথে যদি ব্যবসা করেন তবে সফল হবেনই।তাই ধর্য
ধারন আপনাকে করতে হবে।
ধৈর্য ধরে ব্যবসা করুন ও ব্যবসার ধরণ বুঝে ব্যবসা করুন।
ইকমার্স ভিত্তির আরো পোস্ট আসবে শিগ্রই তাই আমাদের সাথেই থাকুন। ইনশাআল্লাহ আপনাদের হেল্প করতে পারবো।
এই আর্টিকেল টি পুরোটা পড়ার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ, এই আর্টিকেল যদি বুঝতে অসুবিধা হয় অথবা কোনো প্রশ্ন থাকে তবে কমেন্ট করুন, আশা করি আপনি উত্তর পাবেন।আর নতুুন কিছু জানার থাকলে আমাদের জানান আমরা জানানোর চেস্টা করবো। এই আর্টিকেলটি WikiJana.Com সাইটের সম্পদ তাই যদি কেউ কপি করেন তবে আপনারা অবশ্যই ক্রেডিট দিবেন নয়ত আপনার সাইট কপিরাইটের অধিনে চলে যেতে পারে।